বর্তমানে
টেকসই বসবাস একটি গুরুত্তপুর্ন আলচ্যবিষয়।আমরা অনেকেই টেকসই বসবাস (Sustainable living) সম্পর্কে শুনেছি কিন্তু আমরা জানি না আসলে
টেকসই বসবাস বলতে কি বুঝায়। মূলত টেকসই বসবাস হচ্ছে, সল্প সম্পদের যথাযত ব্যবহার
এবং এটার বিপরীতে ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য অল্প পরিমান পরিবেশের অবক্ষয়।অথবা যে জীবন
পদ্ধতিতে পৃথীবির প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ব্যাক্তিগত সম্পদকে সমাজিকভাবে বা
ব্যাক্তিগতভাবে কম ব্যবহারের প্রচেষ্টায় হল টেকসই বসবাস। পরিবেশবিধ এবংপ্রতিষ্ঠাতা “worldwatch
institute and Earth policy institute” Lester R. Brown বলেন, একুশ শতকের টেকসই বসবাস হল “নবায়ন
যোগ্য শক্তির ভিত্তিতে স্থানন্তর, বিকল্প যোগাযোগ পদ্ধতির সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তি”।
বিভিন্ন ধরনের টেকসই জীবন ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বসতবাড়ি,
শক্তি,খাবার,পানি,যোগাযোগ,ময়লা অপসরণ ইত্যাদি। এ ধারণাগুলো আমরা নিত্যদিনের জীবনে
প্রতিটা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারি।
যেমন বসতবাড়ি ক্ষেত্রে, টেকসই ঘর নির্মানের ক্ষেত্রে আমরা
যদি নবায়ন যোগ্য সম্পদ ব্যবহার করি তাহলে অল্প শক্তির খরচ হয় এবং এতে পরিবেশের
অল্প পরিমান ক্ষতি সাধিত হয় বা হয় না। টেকসই ঘরের নির্মাণ সামগ্রি পরিবেশের সঙ্গে
খাপ খায়িয়ে উৎপাদন করা হয়।উদাহরন স্বরূপ বলা যেতে পারে-শুকনো খর বা শন অথবা খর ও
কাঁদা মিশ্রিত রোদে পোড়ান ইট দিয়ে ঘর তৈরী করা যেতে পারে।অনেক বাড়ির মালিক টেকসই
জীবন যাপনের জন্য কম শক্তি খরচ করে ঘর নির্মাণ করে।এখানে হয় তারা শক্তির সর্বোত্তম
ব্যবহার নিশ্চিত করে অথবা সূর্য বা বাতাস থেকে শক্তি উৎপাদন করে।
শক্তির ক্ষেত্রে, টেকসই জীবন যাপন অবশ্যই টেকসই শক্তির
উপর নির্ভর করে। এই শক্তির উৎস অবশ্যই নবায়ন যোগ্য হতে পারে নতুবা অনবায়ন যোগ্য
শক্তি সল্প ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।জৈব শক্তি হঠাৎ করেই তৈরী হয় না তাই এর
পরিবর্তে টেকসই জীবন যাপনের জন্য নবায়ন যোগ্য শক্তি যেমন-সৌর,বায়ু,পানি তাপ বা
ভূত্বাত্তিক শক্তির প্রয়োজন। যে পদ্ধতিতে
শক্তির সংরক্ষণ ও ব্যবহার করতে হবে যেন তা পরিবেশ বান্ধব হয় এবং পরবর্তী
প্রজন্মের জন্য ক্ষতির কারণ না হয়। টেকসই জীবন যাপনের মাধ্যমে একজন লোক পরিবেশের
উপর অল্প পরিমান প্রভাব ফেলে।
খাবারের ক্ষেত্রে, টেকসই জীবন যাপনে খাবারের ক্ষেত্রে
লক্ষ্য রাখতে হবে যে,খাবার যেন অবশ্যই খাদ্য শৃঙ্খলের পর্যায়ে থাকে।খাদ্য অবশ্যই
প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কোন প্রকার রাসায়নিক ব্যবহার এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে উৎপাদন
করতে হবে যেন এটা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতির কারণ না হয়। আমরা স্থানীয়
খাবার গ্রহন করতে পারি।স্থানীয় খাবার গ্রহনের মাধ্যমে এই সমস্যা কম হয় বা এড়িয়ে
যাওয়া যায়।স্থানীয় পণ্য দুরঃদুরন্তে পণ্য
পরিবহনের প্রয়োজন পরে না।অনেকেই তাদের ঘরের কোনে বা আঙ্গিনায় বা সামাজিক বাগান
গুলোতে উৎপাদন করতে পারে।স্থানীয় কৃষি বাজার টেকসই ফল ও শাক-সবজীর ভাল একটা উৎস
হতে পারে।
মোট কথা টেকসই জীবন যাপন বলতে যতটা পারা যায় হালকা ভাবে
পৃথীবিতে জীবন যাপন বোঝায়।যারা টেকসই জীবন যাপন করে তারা খুব সল্প সম্পদ ব্যবহার
করে এবং পরিবেশকে এমন অবস্থায় রেখে যায় যেন তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তার সময়ের
মতই অনেক উচ্চ মানের হয়ে থাকে।
No comments:
Post a Comment