Thursday 31 December 2015

সৌর শক্তির নেটবুক

  সৌর শক্তির নেটবুকঃ
আমরা অনেকেই ব্যক্তিগত কম্পিউটার,ল্যাপটপ বা নেটবুক ব্যবহার করে থাকি।এগুলো সাধারণত্ব বিদ্যুৎ চালিত হয়ে থাকে।এতে প্রচুর পরিমান বিদ্যৎ শক্তির খরচ হয়। কিন্তু আমরা এর পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য শক্তি সৌর শক্তি চালিত নেটবুক ব্যবহার করতে পারি।যেমন,স্যামসাং Nc215s নেটবুক। স্যামসাং এর রাশিয়ান শাখা ২০১১ সালের আগস্ট মাসে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সোলার পাওয়ার স্যামসাং Nc215s নেটবুক বাজারে নিয়ে আসে।এর ১০.১ ইঞ্চি ডিসপ্লে সরাসরি সূর্য থেকে শক্তি গ্রহন করতে পারে। নেটবুকের সঙ্গে একটি সোলার প্যানেল যুক্ত করা থাকে যা এর শক্তিশালী ব্যাটারীকে চার্জ গ্রহন কাজে নিয়জিত থাকে। চার্জ দেওয়ার জন্য সোলার প্যানেলটিকে নেটবুক থেকে আলাদা করে রাখা যায়। এ সময় নেটবুকে থাকা ছোট ব্যাটারী কম্পিউটারকে চালু রাখে।দুই ঘণ্টা সৌর শক্তির বিপরীতে এটি এক ঘণ্টার বেশী কর্ম ক্ষমতা প্রদান করে। পূর্ণ চার্জে এটি ১৪ ঘণ্টার বেশী সময় পর্যন্ত ব্যাক-আপ দেয়। Samsung NC215 has a 10.1-inch (1024 x 600) WSVGA backlit display powered by a 1.66 GHz Intel Atom N570 and Intel GMA 3150 Graphics. Also, 1GB of RAM, 250GB HDD, USB 2.0 ports, a wifi, bluetooth, webcam and a card reader are included in this Black netbook loaded with Windows 7 Starter.
শক্তির সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য এই পণ্যটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ । পণ্যটি পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় টি সি ও সার্টিফিকেট এবং এনার্জি স্টার এওয়ার্ড  পেয়েছে। বর্তমানে রাশিয়া,আমেরিকা,দক্ষিন কোরিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই নেটবুকটি পাওয়া যাচ্ছে

শীতের রাতের উষ্ণ হাসি ( স্মৃতি চারণ মুলক রচনা )



                  
বাস্তবতা চিন্তা করলে রাতে সৎ কাজ করার চেয়ে অসৎ কাজের সংখ্যাই হয়তো বেশী হবে।তবে আজকের রাতের কথা সচেয়ে বেশী স্বরণীয় আমার জীবনে।১০ জানুয়ারি ২০১৪,২৭শে পৌষ ১৪২০,শুক্রবার। রাত ঠিক ১০টা সবাই একত্রিত হলাম ইবনেসিনা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের সামনে।তবুও কিছুক্ষণ অপেক্ষা। এবার রওনা হলাম আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য।আমাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে গরীব,দুঃস্থ,অসহায় লোকদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ।“হিউম্যান এইড বাংলাদেশ” সংগঠনের কর্মীরা ও আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে শীতবস্ত্রের ভ্যানের সাথে সাথে চলা শুরু করলাম।
 আজই বিরোধী দলের হরতাল অবরোধ শেষ হওয়ায় ঢাকা শহর জুরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।আমরা রওনা দিলাম কারওয়ান বাজারের দিকে।সেখানে দোকান-পাট বন্ধ না হওয়ার কারনে পথদুঃস্থদের দেখা মিলল না।আমরা আগারগাও এর দিকে হাটা শুরু করলাম।সেখান থেকে পীরেরবাগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি মনে হচ্ছিল আমাদের লক্ষ্য বুঝি আর পুরন হল না।আমরা শেওড়াপাড়া এসে উঠলাম তখন ১২টা বেজে১১মিনিট।
দেখা মিলল শীতবস্ত্রহীন এক বৃদ্ধ রিকশাওয়ালার। রিক্সার উপর সে ঘুমিয়ে আছে।তাকে ডেকে তুললাম। তার সাথে কথা বললাম এবং তাকে  একটা কম্বল দিয়েই আমাদের শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ শুরু করলাম।এরপর আমাদের ২০ জন সদস্য দুইটা টিমে বিভক্ত হলাম।রাস্তার দুই পাশে দুটি টিম তাদের কাজ শুরু করল। এরই মাঝে কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ হল।
হঠাৎ  দেখা মিলল এক বৃদ্ধা মহিলার সঙ্গে সে শীতে কাঁপছিল।তার গায়ে কোন প্রকারের শীতের পোষাক ছিল না।মনের অবস্থা খারাপ হয়ে গেল।মানুষ এত কষ্ট পায় শীতে।তাকে একটা কম্বল দিলাম ও তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম।
সে কেঁদে ফেলল “বাজান তোমরা মোরে ভারী উপকার করলে,মুই হারা জনম তোমাগোর এই উপকারের কথা মনে রাহুম,আল্লার কাছে দোয়া করুম”।
 এরপর কাজীপাড়া শেষ করে আমরা চলে আসলাম মিরপুর ১০ নম্বর ফ্ল্যাইওভারের কাছে।তারপর শাহ্‌ আলী মার্কেটে ডুকতেই দেখা মিলল এক মধ্য বয়স্ক শুকুর আলীর সাথে।কাজের খোঁজে নতুন ঢাকাতে এসেছে।সে মাথার নিচে একটা ইট ও লুঙ্গী মুরী দিয়ে শুয়ে ছিল।তারপর তাকে একটা কম্বল ও একটা শীতের পোষাক দিই।
রাত ১টা ২৩মিনিটমিরপুর ১০ নম্বর থেকে হালকা নাস্তা চা-বিস্কুট,কলা,কেক খেয়ে নিইদু-এক জন তাদের ব্যস্ততার কারনে টিম থেকে চলে যায়।আমরা আবার সাত জন করে দুটি টিমে বিভক্ত হই।রাস্তার দুই পাশ দিয়ে আগাতে থাকি।
 আমাদের টিম শেরে-বাংলা ন্যাশন্যাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ৪ নম্বর গেটে উপস্থিত হয়। সেখানে বেশ কিছু দুঃস্থ লোকের সন্ধান পায়তারা পুরা ঘুমে আচ্ছন্ন।আমি ভেবেছিলাম সাত-আট জন লোক হবেআমাদের সাড়া পেয়ে সবাই জেগে উঠল।পাচ-ছয়টা শিশু সহ প্রায় বিশ জন মানুস।আমরা শিশুদের শীতবস্ত্র সহ সবাই কে একটি করে কম্বল বিতরণ করি।আমাদের অনেকেই এক সঙ্গে এত লোক দেখতে পেয়ে ছবি তুলতে চাইল।আমরা সবাইমিলে তাদের সঙ্গে একই ফ্রেমে বন্দী হলাম।
 আমরা পাশেই একজন পঙ্গু লোককে দেখতে পেলাম আমরা তাকে একটা শীত বস্ত্র দিয়েই চলে গেলাম ৩ নম্বর গেটে তারপর ২ নম্বর ও এক নম্বর গেটে।
 ওখান থেকে ফিরে আমরা ন্যাশন্যাল বাংলা স্কুলের পিছনের গলিতে ডুকলাম। সেখানেও দেখলাম শীত্বার্থ মানুষের আত্বনার্থ তারা রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে একটু গরম হবার চেষ্টা চালাচ্ছিল।
তারপর আমরা মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে এলাম। আমাদের অন্য টিম তখন কাজ করছিল ন্যাশন্যাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সামনে।মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে প্রথমেই দেখা মিলল এক বৃদ্ধা মহিলা ভিক্ষুকের সঙ্গে তার গায়ে শুধু একটা কাঁথা। আমরা তাকে ডেকে তুললাম তার সাথে কথা বললাম। তাকে একটা শীতবস্ত্র ও একটা কম্বল দেওয়া হল।
 তারপর ঘটল এক আজব ঘটনা।একটা লোককে দেকলাম একটা ছেঁড়া কাঁথা মুরী দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।তাকে প্রথমে আস্তে করে ডাক দিলাম কোন সাড়া পেলাম না।তারপর গাঁয়ে হাত দিয়ে ডাকলাম তাতেও সে সাড়া দিল না।তার মাথার উপর মৌ-মাছির  ঝাকের মত এক ঝাঁক মশা।তখন আমি চিন্তা করলাম মশারীর ভেতর একটা মশা থাকলে সেটার কারণে মানুষের ঘুম হারাম হয়ে যায়।এর মাঝে লোকটা কেমন করে ঘুমিয়ে আছে। পাছ-ছয় মিনিট বিভিন্ন ভাবে তাকে তুলার/জাগানোর চেষ্টা করলাম তাতে কোন লাভ হল না।অবশেষে তার গায়ের উপর কম্বল বিছিয়ে দিয়ে আমরা চলে আসলাম।
 তারপর চোখ পরল একটা জায়গায় যেখানে কয়েকটা লোক বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ব্যানার দিয়ে একটা ঘরের মত তৈরী করে ঘুমিয়ে আছে।তারা আমাদের সাড়া পেয়ে তারা ঊঠে বসল। সেখানে পরিচয় হয় এক অন্তসত্বা মহিলার সঙ্গে।তার সঙ্গে ঘুমিয়ে আছে তার খুব ছোট ছোট দুটি সন্তান ও তার স্বামী। পাশে ঘুমিয়ে আছে আরও দুই জন।আমরা শিশুদের বেশ কয়েকটা শীতবস্ত্রসহ সবাইকে কম্বল দেওয়া হল।
 কিছু আগাতেই দেকলাম একটা লোক ড্রেনের উপর কিছু কাঠ দিয়ে তার উপর ঘুমিয়ে আছে। তাকে ডাক দিলাম এবং জানতে পারলাম তার গ্রামের বাড়ী চাঁদপুর জেলাতে। তাকে দেখে মনে হল ঢাকাতে নতুন তাই জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম। সে উত্তর দিল -আমি শাহ-আলী(র) এর মাজারে এসেছিলাম সেখানে ঘুমাবার জায়গা নেই তাই এখানে ঘুমাচ্ছি। তার গাঁয়ে শুধুমাত্র পলেস্টারের একটা কাপড় ছিল।তাকেও একটা কম্বল দেওয়া হল।
ইতিমধ্যেই আমরা সনি সিনেমা হলের সামনে গোল চত্বরে এসে পৌছেছি। হঠাৎ দেখে মনে হল রেলিং এর কাছে কিছু একটা আছে। এগিয়ে গেলাম দেকলাম চার-পাচ জন ঘুমিয়ে আছে ।দেখাযাচ্ছে তাদের মধ্যে একজনের দু পা নেই।তাদেরকে ডেকে তুললাম।তাদের সঙ্গে কথা বললাম।কথা বলার এক পর্যায়ে বুঝতে পারলাম মুলত তাদের কারও দু পা নেই।তারা সবাই ভিক্ষা করে।তারা কেউই একই এলাকার নয় ভিক্ষা করতে করতেই তাদের বন্ধুত্ব হয়েছে।তারা সবাই এক সঙ্গে ভিক্ষা করে এখন।তাদের বিভিন্ন ভাবে পা হারাতে হয়েছে কেউ বাসের চাকার তলে পড়ে আবার কেউ রেলে কাঁটা পরে।এক বড় ভাই এসে বলল এই কম্বলটা এইপঙ্গুভাইকে দাও।আমার এক বন্ধু বলল কাকে দিব সবারই তো পা নেই।একে একে সবাইকে দেওয়া শেষ হলে আমরা অপর প্রান্তে আরও একজনকে দেকলাম।তাকেও শীতবস্ত্র দেওয়া হল।
একটু পরে আমাদের অন্য টিম এসে হাজির হল।এরপর আমরা চিড়িয়াখানা রোডের দিকে রওনা হলাম।অন্য টিম এক নম্বর ফ্ল্যাইওভারের দিকে।চিড়িয়াখানা রোডে যেতেই হাতের বাঁপাশে দেখলাম একজন মধ্য বয়স্ক লোক।তার কাছে যেয়ে তাকে ডাক দিলাম।সে ঘুম থেকে উঠল তার সঙ্গে কথা বললাম সে রাজ মিস্ত্রীর হেলপার হিসাবে কাজ করে।তার গ্রামের বাড়ী কুষ্টিয়া জেলায়।হরতাল-অবরোধের কারণে গত দুই দিন কাজ পাই নাই সে।কাজ থাকলে সে সব বাসাতেই রাত কাটায় রাজ মিস্ত্রীরা।কাজ নেই এজন্য সে এখানে ঘুমিয়ে আছে।এরপর তাকে একটা কম্বল দিয়ে তার কাছ থেকে বিদায় নেওয়া হল।
কিছুদুর সামনে যেতেই দেখি খোলা আকাশের নিচে কয়েক জন লোক ঘুম ছেড়ে আগুনের তাপে গরম হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।আকাশ কালো মেঘে ঢাকা ছিল তাই রাতে শীতের তীব্রতা একটু বেশী।আমরাও অনেকটা ঠান্ডা হয়ে গেছি।আমরাও আমাদের শরীরটা একটু গরম করার পর স্থান ত্যাগ করলাম।
ঈদ্গাহ মাঠ দিয়ে ‘ডি’ ব্লক গেলাম।যেতে দেখি কয়েকজন বিজ্ঞাপন ব্যানার দিয়ে থাকার একটা ভালই জায়গা তৈরী করেছে।তাদেরকে ডাক দিয়ে কথা বললাম।তারা বলল-আমাদের ভালই শীতকাপড় আছে অন্যদের দেন গ্যা।
আমরা  মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের দিকে গেলাম।এদিকে আন-নূর মসজিদ মার্কেটে বেশ কয়েকজনকে দেখতে পেলাম।দু জন বৃদ্ধ ভিক্ষুকের সাথে কথা বললাম তারা শীতে বেশ কষ্ট পাচ্ছে।তাদেরকে দুটি কম্বল দেওয়া হল।
মসজিদের সিড়ির নিচে দেখতে পেলাম এক মধ্য বয়স্ক লোককে তার গাঁয়ে শুধু একটা ছেঁড়া চাঁদর তাকে ডেকে তুললাম।তাকে জিজ্ঞাসা করা হল সে কি করে।সে উত্তর দিল ভিক্ষুকের গাড়ী ঠেলি।তাকে একটা কম্বল দিই।
পাশে ঘুরে দেখি আমাদের সাড়া পেয়ে সবাই ঘুম থেকে উঠে গেছে।আমি একজন মধ্য বয়স্ক লোকের কাছে বসি।
জিজ্ঞাসা করলাম চাচা কি করেন?
তার কাছ থেকে সহজ সরল জবাব আসল- আমি একজন সুইপার।
আমি বললাম তাহলে তো ভাল অংকের টাকা ইনকাম করেন?
সে বলল- তা অবশ্য ঠিকই কিন্তু আমার হার্টের অসুখ আছে ডেলি প্রায় ১০০ টাহার ঔষধ কিনতে হয়।
আবার বলল- যদি ডেলি কাম থাকত তালি আর সমস্যা হতো না।বাড়ী টাহা পাঠাতি হয় ছাওয়াল(ছেলে)ম্যায়ে(মেয়ে)ইস্কুলি যায় খরচ আছে অনেক।
আমি বললাম মাসে কত টাকা পাঠান বাড়ীতে?
সে বলল-ওর ঠিক নাই ২ হাজার ৩ হাজার কাম বেশী হলে পাঁচ হাজারও পাঠাইছি
তাকে কিছু টাকা ও একটা কম্বল দিয়ে আমি অন্য আরেক জনের কাছে গেলাম।মানুষের এত খোঁজ খবর নেওয়ার অর্থ হল আমরা মুলত সেসব দুঃস্থ অসহায় মানুষের খুজছি তাদেরকেই যেন আমরা সেবাটা দিতে পারি। তাহলে আমাদের মনে অনেকটা আনন্দ অনুভব হবে বা কাজটা স্বার্থক হবে। আন-নূর মসজিদ মার্কেটে আমরা যাদেরকে শীতবস্ত্র প্রদান করলাম তারা বেশীর ভাগই ভিক্ষুক ও দিন মজুর।
এখানের কাজ শেষ হলে আমরা গ্রামীনফোন সেন্টার ও পরে ওভার ব্রিজের নিচে আমাদের অপর টিমের সাথে মিলিত হই।এরপর আমরা সবাই একসঙ্গে ওভার ব্রিজ,খলিল ভবন,মিস্কো মার্কেটের নিচে যায়।  ওভার ব্রিজের উপরে কয়েক জন শিশুকে দেখতে পাই এবং তাদেরকে শীতবস্ত্র দেওয়া হয়।
খলিল ভবনের নিচে কয়েকজনকে দেখতে পাই।এদের মাঝে তিন জন মহিলা ভিক্ষুকের সাথে কথা বলি। তারা গত দুই মাস আগে ফার্মগেটে ভিক্ষা করত।তাদের কাছ থেকে নতুন জ্ঞান অর্জন করলাম।
তাদের অর্থাৎ ভিক্ষুকদের সংগঠন আছে।এরা ঢাকা শহরের,এক জায়গায় ভিক্ষা করে না বিভিন্ন সময় পর পর অন্য স্থানে স্থানন্তর করা হয়।এজন্য তারা আজকে রাতে ফার্মগেট থেকে মিরপুরে এসেছে।যাহোক তাদেরকে শীতবস্ত্র দেওয়া হল।
তখন রাত ঠিক ৩টা বেজে ৪৭ মিনিট।আমাদের দুইটা টিম নতুন সিদ্ধান্তে পৌছালো।আমাদের টিম টেকনিক্যাল হয়ে কল্যাণপুরে গিয়ে থামবঅপর টিম শাহ-আলী মাজারে যাবে এবং মাজার রোড হয়ে গাবতলী হয়ে কল্যাণপুরে এসে মিলিত হব।
অতপর কথা মত আমরা আগাতে শুরু করলাম এরপর গেলাম প্রাইম ইউনিভার্সিটি এর সামনে সেখানে প্রায় পনের ষোল জন লোক দেখতে পেলাম এদের মাঝে দুই জন ভিক্ষুক, তিন জন নতুন ঢাকায় এসেছে বাকিরা সব রিকশা চালক
 এক রিকশা চালোককে জিজ্ঞাসা করলাম প্রতিদিন রিকশা চালান তবে তো ভালই টাকা রোজগার করেন?
সে জবাব দিল-আমার নিজের রিকশা নাই মালিক কে ডেইলি ৫০০ টাহা দিতি হয়। তাছাড়া, দেশে টাহা পাঠান লাগে। চেষ্টা করি আমি কষ্ট করলেও দেশের বউ বেটা মাইয়া সুখে থাক।
এরপর এক ভিক্ষুক কে জিজ্ঞাসা করলাম চাচা আপনি তো কাজ করেতে পারেন তবে কেন ভিক্ষা করেন?
তিনি বলেন-জানি ভিক্ষা খুব খারাপ জিনিস।
আমি আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন করেন তাহলে?
 এরপর তিনি যা দেখালেন, তা দেখার জন্য আমাদের টিমের কোন সদস্যই হয়তবা প্রস্তুত ছিল না।
তিনি তার পায়ের উপরের কাঁথাটা টেনে তার দূর্ঘটনায় কাঁটা পা দেখালেন। পায়ের ঘা এখনো শুকায়নি ঘা তকতক করছে বললাম হাসপাতালে যাননি?
সে বলল-গিছিলাম হাতে টাকা নাই তাই আর থাকি নাই
আমি জিজ্ঞাসা করলাম আপনার পরিবারের কেউ নেই কি?
সে উত্তর দিল-আমার বউ মারা গিয়েছে দুই বছর হল, একটা ছেলে আছে, কিন্তু কি বলব বাজান, সে একটা ফাযিল বিড়ি গাঞ্জা খায়ে বেড়ায়। শুনছি সে বিয়ে করিছে। আমার এক্সিডেন্ট এর খবর শুনেও সে দেখতে আহে নাই, নাকি খবর পায় নাই জানি না। ভিক্ষা ছাড়া আমার উপায় আছে কি? পাল্টা প্রশ্ন আমার দিকে।
 চাচার কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। চাচার কথা শেষে তাকে কিছু টাকা ও একটা কম্বল দেওয়া হল।
তারপর আমারা সামনের দিকে আগাতে থাকলাম এবং কল্যাণপুর গিয়ে শেষ করলামপ্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর আমাদের অপর টিম এসে পৌছালো। এরই মধ্যে ফজরের আযান দিল। শেষ হল শীতের রাতের উষ্ণ হাসি প্রকল্পের কাজ। শেষ হল দুঃখী মানুষের দুঃখ ভাগ করার ও স্বান্তনা দেবার কাজ।